১০৪।
ক্রিস্টমাসের
আর মাত্র দুই সপ্তাহ বাকি। চারিদিকে আনন্দের বন্যা বইছে। যে যত বেশি সুরা পান করতে
পারে সেই তত আনন্দ করতে পারে। বিয়ার, বিটার এল, সাইডার, হোয়াইট ওয়াইন, রেড ওয়াইন, রোজ ওয়াইন, আরচার্স, মালিবু,
টাবু, ভোদকা, জিন, হুইস্কি, ব্রান্ডি, রাম, পিমস, বেইলিজ, কইনট্রু, টিয়ামারিয়া এছাড়া
নানান রকমের ককটেল। এইই না শুধু, এগুলিরও আবার প্রস্তুতকারি দেশ, এলকোহলের মাত্রা ও ব্র্যান্ড অনুযায়ী হরেক প্রকার আছে।
যেমন: হোয়াইট ওয়াইনের মধ্যে সেনিন ব্ল্যাংক, স্যারডোনি আবার রেড ওয়াইনের শিরাজ
ক্যাবারনেট,
সিগলো, কিয়ান্তি ইত্যাদি, এছাড়া বিভিন্ন দেশের
যেমন ইটালি,
অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, ফ্রান্স, চিলি, পেরু। তবে হুইস্কি
যারা খায় তার সাধারণত স্কচ ছাড়া আর কিছু চায় না। অল্প বয়সের মেয়েরা বিয়ার এবং কোন
বিশেষ সময়ে আরচার্স, মালিবু, টাবু এসব খেয়ে থাকে
তবে মাঝে মাঝে রোজ ওয়াইনও পছন্দ করে। বয়স্ক লোকেরা বিটার বা এল পছন্দ করে আবার
মহিলারা সাদা ওয়াইন কিংবা তার সাথে সোডা ওয়াটার মিশিয়ে স্পিতজা কিংবা অরেঞ্জ জুসের
সাথে ভোদকা পছন্দ করে। প্রেমিক আর প্রেমিকা এক সাথে এলে খাবার পরে এরা চায়
সামবুকা। সামবুকা সার্ভ করার ভিন্ন ছোট্ট গ্লাস আছে, তাতে সামবুকা ভরে রোমাঞ্চের
প্রতীক তিনটা কফি বীজ ছেড়ে দিয়ে উপরে আগুন জ্বেলে টেবিলে দিতে হয়। সামবুকার উপর
ভাসতে থাকা কফি বীজ সহ নীলচে আগুনের হালকা শিখা
জ্বলতে থাকে বেশ সুন্দর লাগে দেখতে। ফু
দিয়ে আগুনটা নিভিয়ে এক চুমুকে খেয়ে ফেলে কফি বীজগুলি ফেলে দেয়। খাবার পরে ব্রান্ডি
চাইলে একটু গরম করে সার্ভ করে। আবার খাবার আগে চাইলে তা সাধারণ তাপে সার্ভ করতে
হয়, সাথে বরফের কিউব। এরপর আসে শ্যাম্পেন। শ্যাম্পেন হলো নামি এবং দামী বনেদী
পানীয়। বিশেষ কোন উৎসব আনন্দেই এর ব্যবহার। এটাও একধরনের সাদা ওয়াইন তবে
সাধারণ সাদা ওয়াইনের চেয়ে অনেক দামী। খানিকটা কার্বোনেটেড। এক বোতল শ্যাম্পেন ষোল
পাউন্ড থেকে দুইশ পাউন্ড পর্যন্ত যার দাম। আবার আছে লিকার কফি। কফির সাথে হুইস্কি
মিশিয়ে কড়া করে চিনি সহ গুলিয়ে উপরে ক্রিম ছড়িয়ে দেয় তবে এই ক্রিম কফির সাথে গুলে
যায় না উপরে ভাষতে থাকে এর নাম আইরিশ কফি, এর সাথে চকলেট জাতিয় একটা কিছু
সার্ভ করে। এই রকম ব্রান্ডি দিয়ে যা হয় সেটা হলো ফ্রেঞ্চ কফি, টিয়া মারিয়ার সাথে হলে
নাম হবে ক্যারিবিয়ান কফি। টেবিলে যেমন খাবার উচ্ছিষ্ট হয় তেমন মদও উচ্ছিষ্ট হচ্ছে, তা এনে সিঙ্কে ঢেলে
ফেলতে হচ্ছে। গ্লাসে ঢালার সময় কত মদ যে ছিটে এসে হাতে, শরীরে, কাপরে লাগছে তা খেয়াল করা সম্ভব
হয়না। সমস্ত শরীর দিয়ে মদের গন্ধ হয়ে যেত। কত হাজার প্রকারের যে মদ আছে, মদ পানের যে কত
প্রক্রিয়া আছে আর তা পরিবেশনের জন্য কত গ্লাস আছে তা রাশেদ সাহেব আগে দেখেনি, ভাবতেও পারেনি। এখানে
এই সব দেখে তার মনে হচ্ছে শুধু মদ আর মদ পানের ধরনের বিষয় নিয়ে একটা বিশাল বই হতে
পারে। সারা জীবন মদের মধ্যে ডুবে থেকেও মদ চেনা এবং জানা কঠিন ব্যাপার।
[চলবে]
No comments:
Post a Comment
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আমি আপনার মতামত জানতে আগ্রহি।
আশা করি অতি শিঘ্রই আপনার মন্তব্য বা জিজ্ঞাসার জবাব পাবেন।